টঙ্গী প্রতিনিধি : চিহ্নিত মাদকাসক্ত হারুন সরকার নামের ব্যক্তিকে ব্যবহার করে টঙ্গী পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছ থেকে ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা । ওসি শাহ আলম এর বিরুদ্ধে মাদকাসক্ত হারুন সরকারকে দিয়ে অভিযোগ দিয়েছেন বিভিন্ন জায়গায়। মাদকাসক্ত ও মাদক কারবারীর অভিযোগ নিয়ে সর্ব মহলে নিন্দার ঝড় উঠেছে।
মাদক কারবারি হারুন সরকার টঙ্গীর চেরাগ আলী এলাকার বেক্সিমকো রোডের মৃত ইউসুফ আলী সরকারের ছেলে। সে দীর্ঘ ২০ বছর যাবত মাদকাসক্ত ব্যক্তি হিসেবে গোটা টঙ্গী এলাকায় তার পরিচিত রয়েছে। গত বছর ঈদুল আজহার পূর্বে গাজীপুর-এয়ারপোর্ট বিআরটি প্রকল্পের খননকৃত মাটি চুরি করে নেওয়ায় এবং কাজে বাঁধা দেয়ায় প্রকল্প পরিচালক অভিযোগ করেন মাদকাসক্ত হারুনের বিরুদ্ধে। অভিযোগের ভিত্তিতে হারুন সরকারকে থানায় জিজ্ঞাসাবাদ পূর্বক সতর্ক করে ছেড়ে দেন ওসি শাহ্ আলম।
এছাড়াও মাদকাসক্ত হারুন সরকারের বিরুদ্ধে চেরাগ আলিস্থ তার মার্কেটের ভাড়াটিয়াকে মারধরসহ দোকান থেকে বের করে দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। মার্কেটের এক ভাড়াটিয়া মালেক জানায় দীর্ঘ ৪৭ বছর যাবত দোকান ভাড়া নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। পিতা ইউসুফ আলি সরকারের মৃত্যুর পর ছেলে হারুন সরকার থেকে তিন হাজার টাকা মাসিক ভাড়া ও দুই লাখ ৯০ হাজার টাকা অগ্রিম দিয়ে চুক্তিপত্র দলিল করে করে। দোকান ভাড়াটিয়া আব্দুল মালেক বয়সের ভারে অসুস্থ। মালেক অসুস্থ হওয়ায় এখন তাদের সংসার চালানো কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।
তার মেয়ে জাহানারা জানান, রবিন নামের এক ছেলেকে দোকান ভাড়া চালিয়ে যাবার শর্তে আপতকালিন দোকান করতে দেন আমার অসুস্থ বাবা। বিনিময়ে আমার ভাইকে ব্যবসা শিখিয়ে দিবে রবিন। কিন্তু দোকান মালিক হারুন সরকার ষড়যন্ত্রে করে রবিনের কাছ থেকে আমাদের চেয়ে বেশি অগ্রিম টাকা নিয়ে রবিনকে দোকান দিয়ে দেয়। প্রতিমাসে অতিরিক্ত ভাড়াও নেয় তার কাছ থেকে। আমরা তার নিয়মিত ভাড়াও পরিশোধ করার পর ও আমাদের কাছ থেকে প্রতারণা করে দোকানটি নিয়ে যায়। আমরা এখন কি করে বাঁচবো আমার বাবা অসুস্থ। এখন আমাদের দেয়া অগ্রিম টাকা ফেরত চাইতে গেলে হুমকি প্রদান করে। অপারগ হয়ে এ বিষয়ে পশ্চিম থানায় অভিযোগ করি। গত ২৬ তারিখ হারুন সরকার আমাকে মার্কেটে ডেকে পাঠালে মার্কেট কমিটির সভাপতি ওবায়দুল কাকার মাধ্যমে পঞ্চাশ হাজার টাকা দেয় এবং বাকি টাকা ঈদের পর দেয়ার আশ্বাস দেয়; এই মাদকাসক্ত ও মাদক কারবারি হারুন সরকার|
উত্তরার আমার হোমসহ বিভিন্ন মাদক নিরাময় কেন্দ্রে বহুবার রিহ্যাবে থাকে । মাদকাসক্ত হারুন সরকার এখন অসুস্থ দোকান মালিক মালেকের বিরুদ্ধে উল্টো অভিযোগ করেন যে, ভাড়াটিয়ার কাছে সে বকেয়া ১৬ লক্ষ টাকা পাবে। কিন্তু ওসি শাহ্ আলম তাকে ভাড়াটিয়ার দাবিকৃত অগ্রিম নেয়া টাকা ফেরত দিতে বলেছে। মাদকের কারণে বহু বছর পূর্বে স্ত্রী পরিত্যক্ত হারুন সরকার এখন অভিযোগ করে বলছে ঈদ এলেই নাকি ওসি শাহ্ আলম তাকে হয়রানি করে।
হারুন আরো বলেন, তার মার্কেটের সামনে ফুটে দোকান বসিয়ে ওসি শাহ্ আলম চাঁদাবাজি করে কি জানতে চাইলে এলাকার ব্যবসায়ীরা এমন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কথিত কয়েকজন সাংবাদিক ঈদের আগে হারুন সরকারের কাছ থেকে ফায়দা নেওয়ার জন্য তাকে দিয়ে অভিযোগ দিয়েছে ওসির বিরুদ্ধে। যে অভিযোগটি দেওয়া হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ভিত্তিহীন।
ব্যবসায়ীর আরও বলেন, টঙ্গী পশ্চিম থানার ওসি থানায় যোগদানের পরে ফুটপাতে রাস্তা দখল করে যারা ব্যবসা করত তাদেরকে উচ্ছেদ এলাকার করে স্থায়ী ব্যবসায়ীদের ব্যবসার পরিবেশ তৈরি করে দিয়েছেন। ওসি শাহ আলমের কারণে এই এলাকার চাঁদাবাজদের চাঁদাবাজি থেকে অনেকটা রক্ষা পেয়েছি।
এছাড়া এলাকার বিস্তারলাভ করা মাদক ও কিশোর গ্যাং নির্মূলে ওসি শাহ্ আলমের অনেক অবদানও রয়েছে। টঙ্গী পশ্চিম থানা এলাকায় অর্জন করেছেন সুখ্যাতি। যোগদানের পর থেকেই এলাকাবাসীকে সাথে নিয়ে একের পর এক সফল অভিযানে বহু মাদক কারবারিকে গ্রেফতারসহ এলাকা থেকে বিতাড়িত করতে সক্ষম হয়েছে।
এরমধ্যে অনেক চাঞ্চল্যকর হত্যা রহস্য উন্মোচন করেছেন তিনি। এই এলাকার কিশোর গ্যাং, বিভিন্ন কারখানা সহ প্রতিষ্ঠানে চাঁদাবাজি, ছিনতাই করতো তাদেরকে প্রতিহত প্রতিরোধে করতে এলাকার লোকজন নিয়ে নিয়মিত কাউন্সিলিং, সিসি কেমেরা স্থাপন ও মনিটরিং করে আসছে। রাজনৈতিক সহিংসতা মোকাবিলায় ওসি শাহ্ আলমের তৎপরতা কারণে একটি বিশেষ মহল তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। কুচুক্তি মহলটির তাদের নিঃস্বার্থ হাসিল করতে না পেরে বহুদিন ধরে তারা ওসির বিরুদ্ধে অপতৎপরতা ও অপপ্রচার চালাতে কাজ করছে। এই কুচক্রী মহলটির তাদের হীন স্বার্থ হাসিল করতে না পারায় একজন মাদকাসক্ত কে দিয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনারসহ মহাপুলিশ পরিদর্শক বরাবরে মিথ্যা অভিযোগ করিয়েছে। এই মিথ্যা অভিযোগ কে পুঁজি করে কথিত কয়েকজন সাংবাদিক তাদের স্বার্থ হাসিলের জন্য কিছু পত্র-পত্রিকায় লিখালিখি করছে। তারা ওসি শাহ আলম সাহেবের বিরুদ্ধে মিথ্যা সংবাদ প্রচার করে ফায়দা হাসিলের চেষ্টা চালাচ্ছে মর্মে তথ্য রয়েছে।
এ বিষয়ে ওসি শাহ্ আলম বলেন, এসকল অভিযোগ ভিত্তিহীন। মোঃ হারুন অর রশীদ সরকারের বিরুদ্ধে মার্কেটের ব্যবসায়ীদের ভয়-ভীতি , জমি দখলসহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে। মাদকাসক্ত হারুন সরকারের বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযোগ আসার পরে বিষয়টি জমিজমা সংক্রান্ত হওয়ায় উভয় পক্ষকে বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তি করার পরামর্শ দেন।