কারাবন্দি ডেসটিনির রফিকুলের জুম মিটিংয়ে তোলপাড়

 

নিজস্ব প্রতিবেদক : অসুস্থতার অজুহাতে হাসপাতালে থাকা ডেসটিনির কারাবন্দি ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আমিনের মোবাইল ফোন ব্যবহার ও জুম মিটিংয়ে অংশ নেওয়ার ঘটনা ফাঁস হওয়ার পর কারা প্রশাসনে তোলপাড় শুরু হয়েছে।

 

এ ঘটনায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) প্রিজন সেলের প্রধান কারারক্ষী, সহকারী প্রধান কারারক্ষী ও ৬ জন কারারক্ষীকে ক্লোজড করা হয়েছে। কারা অধিদফতরের পক্ষ থেকে গঠন করা হয়েছে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি ।

 

দুর্নীতি মামলায় কারাবন্দি রফিকুল আমীন এখন কারা তত্ত্বাবধানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) আছেন। সেখান থেকেই তিনি ভার্চুয়াল বৈঠক করে ‘নতুন এমএলএম ব্যবসার পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা’ করেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

 

এ ঘটনা তদন্তে কারা অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগের ডিআইজি তৌহিদুল ইসলামকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন মুন্সিগঞ্জের জেল সুপার নুরুন্নবী ভূঁইয়া এবং নারায়ণগঞ্জের জেলার শাহ রফিকুল ইসলাম।

 

এ বিষয়ে শুক্রবার কারা মহাপরিদর্শক কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোমিনুর রহমান মামুন জানান, কমিটি গঠনের পাশাপাশি হাসপাতালে যে সব কারারক্ষীরা দায়িত্বে ছিলেন, তাদের সরিয়ে অন্য সদস্যদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

 

তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর সেসব কারারক্ষীদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এছাড়া হাসপাতালের প্রিজন সেলে সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালনের জন্য একজন ডেপুটি জেলার নিয়োগ করা হয়েছে। ডায়াবেটিসজনিত অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে দুই মাস আগে কেরানীগঞ্জে কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বঙ্গবন্ধু মেডিকেলের প্রিজন সেলে ভর্তি হন রফিকুল আমীন।

 

কিন্তু সেখানে থেকেই তিনি ব্যবসায়িক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন বলে এখন অভিযোগ উঠেছে।ডেসটিনির কয়েকজন কর্মকর্তাও সেখানে যুক্ত ছিলের। এই মিটিংয়ে রফিকুল আমীন দেশের বাইরে থেকে টাকা আনার বিষয়সহ বিভিন্ন ধরনের ব্যবসায়িক দিক নির্দেশনা দিয়েছেন বলেও অভিযোগ আছে।

 

প্রসঙ্গত, ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেড নামে মাল্টিলেভেল মার্কেটিং কোম্পানি দিয়ে ২০০০ সালে ডেসটিনি গ্রুপের যাত্রা শুরু হয়। এক দশকের মধ্যে বিমান পরিবহন, আবাসন, কোল্ডস্টোরেজ, জুট মিল, মিডিয়া, বনায়নসহ বিভিন্ন খাতে ৩৪টি কোম্পানি খুলে বসে এই গ্রুপ।

 

কিন্তু মাল্টিলেভেল মার্কেটিংয়ের নামে ২০ লাখের বেশি মানুষের কাছ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা নিয়ে তা আত্মসাতের অভিযোগে ২০১২ সালে মামলা হলে ওই বছরের অক্টোবরে গ্রেপ্তার হন রফিকুল আমীনসহ কোম্পানির অধিকাংশ শীর্ষ কর্মকর্তা, বাকিরা লাপাত্তা হয়ে যান। পরে দুদকের নোটিসে সম্পদের হিসাব বিবরণী জমা না দেওয়ায় গতবছর রফিকুল আমীনকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেয় আদালত।