স্পোর্টস ডেস্ক : অবশেষে দলবদল আলোচনা নাটকের অবসান হলো লিওনেল মেসির। কয়েক দিনের নাটক শেষে তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, চুক্তির শর্ত পূরণ করতে আরও এক বছর বার্সেলোনায় থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। গোল ডট কমকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে শুক্রবার তার সিদ্ধান্তের কথা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন আর্জেন্টাইন এই কিংবদন্তি। গত ২৫ আগস্ট ফ্যাক্স বার্তার মাধ্যমে বার্সেলোনা ছাড়ার কথা জানিয়েছিলেন মেসি।
তারপর থেকে ইংলিশ, স্প্যানিশ ও ফরাসি গণমাধ্যমগুলোতে যেমন খবর প্রচার হচ্ছিল তাতে এখন হঠাৎ মেসির থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়তো অনেকের কাছেই অপ্রত্যাশিত! মেসির পক্ষ থেকে প্রদান করা তার বাবা ও এজেন্ট হোর্হে মেসির বিবৃতিতেও থেকে যাওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি। কয়েক ঘণ্টা আগে প্রদান করা ওই বিবৃতিতে দাবি করা হয় ক্লাব ছাড়তে ৭০০ মিলিয়ন ইউরো রিলিজ ক্লজ প্রদান করতে হবে বার্সেলোনার এই দাবি অযৌক্তিক।
লা লিগা কর্তৃপক্ষের কড়া সমালোচনাও করা হয়। তার পরপরই যে মেসি থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত জানাবেন সেটা কে-ই বা ভেবেছিলেন! মেসির সঙ্গে বার্সেলোনার চুক্তিতে উল্লেখ আছে প্রতি মৌসুম শেষে চাইলে ক্লাব ছাড়তে পারবেন ছয় বারের বর্ষসেরা ফুটবলার। সেক্ষেত্রে রিলিজ ক্লজের ৭০০ মিলিয়ন ইউরো পরিশোধ করতে হবে না। তবে ক্লাব ছাড়ার ইচ্ছার কথা জানাতে হবে মৌসুম শেষ হওয়ার ২০ দিন আগে।
এদিকে আর্জেন্টাইন তারকার আইনজীবীর দাবি, যেহেতু করোনার কারণে এবারের মৌসুম স্বাভাবিক সময়ে শেষ হয়নি। মৌসুম শেষ হয়েছে অনেক পরে। এই পেছানোর সময় ধরেই চুক্তির শর্ত মতে ক্লাব ছাড়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন মেসি, যাতে রিলিজ ক্লজ পরিশোধ করতে হবে না। কিন্তু বার্সেলোনা এবং লা লিগা কর্তৃপক্ষ এই যুক্তি উড়িয়ে দিয়েছে বারবার। তাদের দাবি মেসির ক্লাব ছাড়ার সিদ্ধান্ত জানানোর শেষ সময় ছিল গত ১০ জুন।
করোনায় মৌসুম পিছিয়ে গেলেও তাতে মেসির ইচ্ছার কথা জানানোর সময় পিছিয়ে যায়নি। বা বিষয়টা তারা মানতে নারাজ। বার্সেলোনা কর্তৃপক্ষ ও মেসি পক্ষের মুখোমুখি সাক্ষাতেও এর সুরাহা হয়নি। বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ানোর সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছিল। গোল পোর্টালকে দেয়া সাক্ষাৎকারে মেসি জানালেন, বার্সেলোনাকে আদালতে নিতে চননি তিনি। সেই শৈশব থেকে যে ক্লাবকে ভালোবেসে এসেছেন সেই ক্লাবকে আদালতে নিতে চাননি বলেই আরও এক বছর থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, আমি ভেবেছিলাম এবং নিশ্চিত ছিলাম যে ইচ্ছে করলেই ক্লাব ছাড়তে পারি।
সভাপতি সব সময় বলত, মৌসুম শেষে আমি যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারব। আমার প্রিয় ক্লাবের বিপক্ষে কখনোই আমি আইনি লড়াইয়ে যাব না, কারণ আমি বার্সেলোনাকে ভালোবাসি। একারণেই আমি বার্সেলোনায় থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যে ক্লাবটা আমি এখানে আসার পর থেকে আমাকে সবকিছু দিয়েছে। বহু তিক্ততা স্বত্ত্বেও বার্সেলোনার প্রতি কৃতজ্ঞতা ঝড়ল ৩৩ বছর বয়সী তারকার কণ্ঠে, এটা আমার প্রাণের ক্লাব। আমি আমার জীবন গড়েছি এখানে এসে। বার্সেলোনা আমাকে সব কিছুই দিয়েছে, আমিও উজাড় করে দিয়েছি। আমি এটা জানি যে, বার্সাকে আদালতে নেয়ার কথা একবারও ভাবনায় আসেনি আমার।