শাসনের কারণেই লরেনের আত্মহত্যা

বিনোদন প্রতিবেদক : তরুণ মডেল ও অভিনেত্রী লরেন মেন্ডেস পরিবারের সাথে অভিমান করে নিজ বাসায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। ক্যারিয়ারের ফুল ফোটার আগেই নিভে যায় তার নামের আলো। এ তরুণীর মৃত্যুতে শোবিজ অঙ্গন শোকাহত। ধারণা করা হচ্ছে, স্বাধীন জীবনযাপনের কারণে বাবা–মায়ের শাসনে অভিমান করেই আত্মহত্যা করেছেন এই তরুণী। এদিকে এই ঘটনায় লরেনের বাবা ব্লিন মেন্ডেস গুলশান থানায় এক অপমৃত্যুর মামলা করেন।

সেই মামলায় লরেন মেন্ডেসের বাবা উল্লেখ করেন, শাসন করার কারণেই মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। গুলশান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আমিনুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা একটি অপমৃত্যুর মামলা নিয়েছি। সেখানে তাঁর বাবা লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। সেটা আমরা থানায় রেকর্ড করেছি।’

সেখানে কী লেখা আছে জানতে চাইলে এই কর্মকর্তা জানান, মেয়েটির বাবা লিখেছেন, গত ২৯ তারিখ বিকেলে লরেন কাউকে কিছু না জানিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে যান। ৩০ তারিখ ভোর সাড়ে ৫টায় বাসায় ফেরেন। বাবা–মা সারা রাত বাইরে থাকার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘প্রয়োজনে বাইরে ছিলাম।’ পরে মেয়েকে বকাঝকা দেওয়ায় তিনি নিজ কক্ষে গিয়ে বাতি নিভিয়ে দেন। পরে ভোর সাড়ে ৭টায় গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় তাঁকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়।

মেয়ের মৃত্যুতে শোকাহত বাবা ব্লিন মেন্ডেস ভেঙে পড়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমার মেয়েটা ছিল অনেক স্বাধীনচেতা। বাইরে থাকতে চাইত বেশি। কাউকে কিছু না বলেই বাইরে চলে যেত। আমরা চাইতাম এভাবে যখন-তখন বাইরে না যাক। মাঝেমধ্যে আমরা তাঁকে বাধা দিতাম। আমরা চাইতাম সে তার ক্যারিয়ারে ভালো করুক। আমরা তার ভালোর জন্য কিছুটা শাসন করতাম। সে আমাদের কথা বুঝতে পারল না।’ গত দুই বছর ধরে লরেন নিজের ইচ্ছে মতোই চলাফেরা করতেন। বাবা–মা কিছু বললেই হুট করে রেগে যেতেন।

এভাবে বাইরে যাওয়া নিয়ে বহুবার তিনি তাঁর বাবা–মায়ের সঙ্গে রাগারাগি, তর্কাতর্কি করছেন। তবে কখনো আত্মহত্যার চেষ্টা করেননি বা তাঁর ভেতর এমন কোনো লক্ষণও দেখা যায়নি। লাশের ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল বেলা তিনটার দিকে তাঁর পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। এই সময় উপস্থিত ছিলেন লরেন মেন্ডেসের বাবা এবং মামা। পরিবারের শোক কিছুটা কমলে আবারও তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করবে পুলিশের তদন্ত দল। গত ২৭ আগস্ট সর্বশেষ ‘ট্রল’ নাটকের শুটিংয়ে অংশ নিয়েছিলেন লরেন মেন্ডেস, সঙ্গে ছিলেন তাঁর মা ও ছোট দুই বোন। নাটকের গল্পে তিনি ছিলেন অপূর্বের ছোট বোন।

ক্যারিয়ারের শুরুটা মডেলিং দিয়ে হলেও পরিচিতি পেয়েছেন বিজ্ঞাপন দিয়ে। শুরুর দিকে এয়ারটেলের বেশ কিছু ফটোশুটে অংশ নেন। এরপর টানা এয়ারটেলের কয়েকটি বিজ্ঞাপনে কাজ করে আলোচনায় চলে আসেন তিনি। বিজ্ঞাপন ছাড়াও তাকে দেখা গিয়েছে মিউজিক ভিডিওতে। ‘ঘোর’ শিরোনামে তপু খান ও কণার একটি দ্বৈত গানের ভিডিওতে মডেল হিসেবে হাজির হন তিনি।

প্রেক্ষাগৃহের ব্যানারে নির্মিত এই ভিডিওতে তার সাবলীল অভিনয় নজর কেড়েছে সবার। প্রশংসিত হন স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‌‘অমর প্রেম’ এবং ‘তোমার পিছু ছাড়ব না’ গানে অভিনয় করে। তিন দিন আগে এই অভিনেত্রী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর অভিনীত একটি বিজ্ঞাপন শেয়ার করে ভিউ বেশি হওয়ার খবরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছিলেন।