আগামীকাল মেসির ভাগ্য নির্ধারণ!

স্পোর্টস ডেস্ক : বার্সেলোনা ছাড়ছেন মেসি। গেল সপ্তাহে ক্লাবটির তারকা ফুটবলার লিওনেল মেসি নিজেই এমন আভাস দিয়েছিলেন। ব্যুরো ফ্যাক্সের মাধ্যমে বার্সেলোনা কর্মকর্তাদের ন্যু ক্যাম্প ছাড়ার ব্যাপারে নিজের ইচ্ছার কথা জানিয়েছিলেন মেসি। এরপর অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে যায়, বার্সেলোনার জার্সিতে আর দেখা যাবে না বিশ্বসেরা এই ফুটবলারকে।

এদিকে ম্যানচেস্টার সিটির সঙ্গে আলোচনা শেষে এবার বার্সা প্রেসিডেন্ট জোসেপ মারিয়া বার্তেমেউরের সঙ্গে আগামীকাল বুধবার বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন লিওনেল মেসির বাবা হোর্হে মেসি। বার্সেলোনা ভিত্তিক স্প্যানিশ ক্রীড়া বিষয়ক দৈনিক মুন্ডো দেপোর্তিভো এ খবর প্রকাশ করেছে। পত্রিকাটি বলছে, ওইদিনই হয়তো নির্ধারিত হবে মেসির ভবিষ্যৎ। বার্সেলোনায় থাকবেন, নাকি বার্সা ছেড়ে যাবেন- নিশ্চিত হবে সেদিনই।

এদিকে মেসির দল বদলের সিদ্ধান্তের খবর ছড়িয়ে পরলে জলঘোলা হয় অনেক। এমনিক বার্সেলোনায় বিক্ষোভ পর্যন্ত হয়েছে। এছাড়াও মুষড়ে পড়েছেন মেসির ভক্ত সমর্থকরাও। তাকে ক্লাবে রাখতে স্বয়ং বার্সা সভাপতি বার্তেমেউ পদত্যাগ করবেন বলেও জানিয়েছেন। তবুও সিদ্ধান্তে অনড় থাকেন মেসি।

এর মধ্যে মেসির রিলিজ ক্লজ নিয়ে তৈরি হয়েছে মতবিরোধ। ৭০০ মিলিয়ন ইউরো রিলিজ ক্লজ নির্ধারিত মেসির। এই ইস্যুতে মেসিকে সতর্ক করেছে লা লিগা কর্তৃপক্ষ। স্পেন ছাড়তে হলে রিলিজ ক্লজের পুরো ৭০০ মিলিয়ন ইউরো পরিশোধ করে তবেই যেতে হবে এই ফুটবল বিস্ময়কে। এ নিয়ে বার্সেলোনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে একটি বৈঠকে বসতে চেয়েছিলেন মেসি। অবশেষে সেই বৈঠকটিই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আগামীকাল।

এই বৈঠক মেসির ইচ্ছায় নয়, হচ্ছে বার্সা সভাপতির ইচ্ছায়। কারণ, মেসির সঙ্গে ক্লাব ছাড়ার বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি নন বার্তোমেউ। সেকারণে এর মধ্যেই রোজারিও ছেড়ে বার্সেলোনার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন মেসির বাবা। গণমাধ্যমের সংবাদ অনুযায়ী, মেসির বার্সেলোনা ছাড়তে চাওয়ার এ সময়ে জরুরি কাজে আর্জেন্টিনায় ফিরেছিলেন তার বাবা। তবে তার চেয়েও জরুরি ভিত্তিতে এবার স্পেনে ফিরতে হচ্ছে তাকে। সোমবারই বার্সেলোনায় পা রাখার কথা হোর্হে এবং মেসির।

এদিকে, গত কয়েকদিনে স্প্যানিশ গণমাধ্যমের সংবাদ অনুযায়ী, চাইলেই বিনা রিলিজ ক্লজে ক্লাব ছাড়তে পারবেন মেসি। মেসির চুক্তিপত্রে এমনটাই নাকি উল্লেখ করা আছে। শেষ বছরে কার্যকর হবে না তার রিলিজ ক্লজ। অন্যদিকে, শুরু থেকেই বার্সেলোনা কর্তৃপক্ষ বলে আসছে তাকে ক্লাব ছাড়তে হলে রিলিজ ক্লজের পুরো ৭০০ মিলিয়ন ইউরো দিয়েই যেতে হবে। বিষয়টি দিন দিন জটিল থেকে জটিলতর হচ্ছে। সে জটিলতা কাটাতেই দুই পক্ষ আলোচনায় বসছে। আলোচনা হবে রিলিজ ক্লজ ইস্যুতে।

বার্সেলোনা থেকে যাতে স্বাভাবিক নিয়মে যেতে পারেন, সেকারণেই ক্লাব সভাপতির সঙ্গে এর আগে আলোচনায় বসতে চেয়েছিলেন মেসি। অন্যথায়, মামলা করলে মেসিই জিতবেন বলে সংবাদ প্রকাশ করেছে স্প্যানিশ গণমাধ্যমগুলো। কিন্তু ২০ বছর যে ক্লাবে খেলেছেন, সে ক্লাবের সঙ্গে আইনি লড়াইয়ে যাওয়ার ইচ্ছে নেই আর্জেন্টাইন তারকার। আশা করছেন, আলোচনা সভাতেই সব কিছু ভালোভাবে মিটে যাবে।

প্রসঙ্গত, ক্লাবের নানা কাণ্ডে অসন্তুষ্ট হয়ে গত মঙ্গলবার বুরোফ্যাক্সের মাধ্যমে বার্সেলোনাকে এক চিঠিতে চলে যাওয়ার কথা জানান মেসি। কিন্তু ক্লাব রাজি নয় তাতে। অবশ্য মেসি ক্লাব যে ছাড়ছেনই, তা আগের দিন বুঝিয়ে দিয়েছেন। করোনার কারণে পিসিআর টেস্ট দিতে যাননি তিনি। যোগ দিচ্ছেন না অনুশীলনেও। সামনে থাকা ৭০০ মিলিয়ন ইউরো রিলিজ ক্লজের বাঁধা ভাঙার চেষ্টা করে যাচ্ছেন রেকর্ড ছয় বারের ব্যালন ডি’অর জয়ী এ তারকা।