মাহমুদউল্লাহ একাদশ প্রেসিডেন্টস কাপ চ্যাম্পিয়ন

স্পোর্টস ডেস্ক : বিসিবি’র প্রথমবারের মতো আয়োজিত প্রেসিডেন্টস কাপের শিরোপা জিতেছে মাহমুদউল্লাহ একাদশ। ফাইনালে নাজমুল একাদশকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে তারা। নাজমুল একাদশের দেয়া ১৭৪ রানের লক্ষ্য লিটন দাসের ফিফটিতে সহজেই পার পেয়ে যায় মাহমুদউল্লাহ একাদশ। বিসিবি প্রেসিডেন্ট’স কাপের ফাইনালে মিরপুর শেরে বাংলায় টস জিতে নাজমুল হোসেন শান্ত একাদশকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। টস জিতে আগে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়াটা যে সঠিক ছিল তা বুঝিয়ে দিয়েছে রিয়াদের দলের দুই পেসার রুবেল হোসেন এবং সুমন খান।

অন্যদিকে নাজমুল একাদশের ব্যাটসম্যানরা ব্যর্থ হলেও একমাত্র ইরফান শুক্কুরের দৃঢ় ব্যাটিং প্রশংসা কুড়িয়েছে। বিসিবি প্রেসিডেন্ট’স কাপের ফাইনালেও দেখা যায়নি বড় সংগ্রহ। ফের ব্যর্থ হতে দেখা গেছে টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের। টস হেরে আগে ব্যাট করে শান্ত একাদশ ১৭৩ রান করেছে মূলত ইরফানের ঝলকে। নিজেকে এই আসর নিয়ে নতুন করে চেনানো এই বাঁহাতি করেছেন ৭৭ বলে করেছেন ৭৫ রান। মাত্র ৩৮ রান দিয়ে ৫ উইকেট নিয়েছেন সুমন। মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনের পর টুর্নামেন্টের দ্বিতীয়বার কোন বোলার নিলেন ৫ উইকেট।

টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই রুবেল হোসেনের তাণ্ডবের সামনে পড়ে শান্ত একাদশ। ইনিংসের প্রথম ওভারেই রুবেল হোসেনের বলে মাত্র ৪ রান করে ফিরতে হয় ওপেনার সাইফ হাসানকে। এরপর উইকেটে আসেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। তবে তিনি উইকেটে আসার পরেই রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে ড্রেসিংরুমে ফেরেন সৌম্য সরকার। সৌম্য রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে ফিরলে উইকেটে আসেন মুশফিকুর রহিম।
তবে বেশিক্ষণ ক্রিজে থাকতে পারেননি মুশফিক। সুমন খানের প্রথম শিকারে পরিণত হওয়ার আগে ৩৭ বলে মাত্র ১২ রান করেন মুশফিক, দলীয় ৩৫ রানেই ২ উইকেট হারায় শান্ত একাদশ। এরপর আবারও মাঠে ফেরেন সৌম্য, তবে ১৫তম ওভারে দলীয় ৪৩ রানের মাথায় ব্যক্তিগত ৫ রানে সুমন খানের দ্বিতীয় শিকার হয়ে ফেরেন তিনি।

৪৩ রানে ৩ উইকেটে হারিয়ে চাপে পড়া শান্তদের চেপে ধরেন সুমন। উইকেটে নতুন আসা আফিফ হোসেন ধ্রুবকে কোনো রান তোলার আগেই নিজের তৃতীয় শিকারে পরিণত করেন সুমন খান। এরপর তাওহিদ হৃদয়ের সঙ্গে ১৯ রানের জুটি গড়ে দলীয় ৬৪ রানের মাথায় ব্যক্তিগত ৩২ রানে মেহেদি হাসান মিরাজের শিকার হয়ে ফেরেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। এরপর হৃদয়কে সঙ্গে নিয়ে দলের বিপর্যয় সামাল দিয়ে ৭০ রানের জুটি গড়েন শুক্কুর। ইনিংসের ৩৬তম ওভারে মাহমুদউল্লাহ হৃদয়কে (২৬) তুলে নিলে ভাঙে এই জুটি। এরপরও নিজের দৃঢ় ব্যাটিং ধরে রাখেন শুক্কুর তুলে নেন অর্ধশতক। উইকেটের অপরপ্রান্তের ব্যাটসম্যানরা যাওয়া আসার মাঝে থাকলেও তিনি ছিলেন দৃঢ়।

স্কোরবোর্ডে ১৪৭ রান যোগ হতে ফেরেন নাইম হোসেন (৭), ১৬০ হতে ফেরেন নাসুম আহমেদ (৩) এরপর ১৭১ রানে ব্যক্তিগত ৭৫ রানে শুক্কুর ফিরলে দলীয় সংগ্রহ ২০০ কেবল স্বপ্নই রয়ে যায় শান্ত একাদশের। শেষ উইকেটে তাসকিন এবং আল-আমিন মাত্র ২ রান তুলতেই তাসকিন এবাদত হোসেনের বলে বোল্ড হয়ে ফিরলে ১৭ বল বাকি থাকতেই ১৭৩ রানে অলআউট হয় নাজমুল হোসেন শান্ত একাদশ। আর তাতেই মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দলের সামনে জয়ের লক্ষ্য দাঁড়ায় নির্ধারিত ৫০ ওভারে ১৭৪ রানের। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতে মুমিনুল হককে হারাতে হলেও মাহমুদুল হাসান জয়কে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন লিটন দাস।

৩২ বলে ১৮ রানের ইনিংস খেলে জয় বিদায় নিলে ক্রিজে আসেন ইমরুল কায়েস। তার সঙ্গ কাজে লাগিয়ে লিটন পূর্ণ করেন অর্ধশতক। তবে ৬৯ বলে ৬৮ রান করে লিটনও জয়ের মত নাসুমের শিকারে পরিণত হন। তার আগে হাঁকান দৃষ্টিনন্দন ১০টি চার। তার বিদায়ের পর ইমরুলকে সঙ্গে নিয়ে জয়ের পথে এগোতে থাকেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। শেষপর্যন্ত ইমরুলকে নিয়ে জয় নিশ্চিত করেই মাঠ ছাড়েন। ১টি চার ও ৫টি ছক্কা হাঁকানো ইমরুল ৫৪ বলে ৪৭ রান করে অপরাজিত থাকেন। ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় ১১ বলে ২৩ রান করে অপরাজিত থাকেন শিরোপাজয়ী অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ।